Last Updated on [modified_date_only] by Shroddha Bhattacharyya
কে টিভি বাংলা ডিজিটাল: বুধবার রাতের আকাশ যেন রূপকথার (Auroras) ক্যানভাস। পৃথিবীর বহু দেশে দেখা মিলল রঙিন আলোর অপূর্ব নৃত্য-মেরুপ্রভা বা অরোরা। কোথাও আকাশ ভরে উঠল সবুজ ঝলকে, কোথাও লাল-বেগুনি আলোর ঢেউ দুলে উঠল দিগন্ত জুড়ে। উত্তর গোলার্ধে এই দৃশ্য ‘অরোরা বোরিয়ালিস’ নামে পরিচিত, আর দক্ষিণে এটিকে বলা হয় ‘অরোরা অস্ট্রেলিস’। বছরে বহু বার এই সৌন্দর্য দেখা গেলেও, বুধবারের অরোরা ছিল ব্যতিক্রমীভাবে উজ্জ্বল ও দূরগামী।
কি ঘটেছিল সেই রাতে? (Auroras)
স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী (Auroras) , ১২ নভেম্বর রাত আটটা বেজে কুড়ি মিনিট নাগাদ (ইস্টার্ন স্ট্যান্ডার্ড টাইম) সূর্য থেকে আসা এক তীব্র সৌরঝড় পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রে আঘাত হানে। এই ঝড়টি জি৪ পর্যায়ের-অর্থাৎ অত্যন্ত শক্তিশালী। এর ফলে মুহূর্তেই সৃষ্টি হয় ভূ-চৌম্বকীয় অস্থিরতা। এর জেরে ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং উত্তর আমেরিকার আকাশ আলোকময় হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, দূরত্বের বিচারে বেশ নিচে থাকা আমেরিকার টেক্সাসের আকাশেও ধরা দেয় উজ্জ্বল অরোরা। বিস্ময়করভাবে, উত্তর ভারতের কিছু অঞ্চলেও সেই রঙিন আলোর ছাপ দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা-যা অত্যন্ত বিরল ঘটনা।

মেরুপ্রভা হয় কীভাবে? (Auroras)
এই অপূর্ব সৌন্দর্যের বৈজ্ঞানিক রহস্য লুকিয়ে আছে সূর্যের (Auroras) কার্যকলাপে। সূর্যের করোনা অঞ্চল থেকে নিয়মিত নির্গত হয় সৌরবায়ু-যা আসলে ইলেক্ট্রন ও প্রোটনের প্রবাহ। সেই গতিশীল কণা যখন পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রে ধাক্কা খেয়ে মেরু অঞ্চলের দিকে নেমে আসে, তখন বাতাসে থাকা অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন অণুর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় অণুগুলিতে তৈরি হয় আলো-সবুজ, লাল, বেগুনি কিংবা নীল। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, আকাশজুড়ে নাচছে আলোর মায়াবী পর্দা।

আরও পড়ুন: Bihar Assembly Election 2025: বিহারে এনডিএ-র দাপুটে জয়, শুভেচ্ছা জানালেন মোদী!
সৌরঝড়ের বিপদ কতটা?
বুধবারের জি৪ ঝড় চোখের সামনে সৌন্দর্য উপহার দিলেও, প্রযুক্তির জন্য ছিল বড়সড় পরীক্ষার সময়। বিজ্ঞানীরা জানান, এই মাত্রার ঝড়ের ফলে জিপিএস সিগন্যাল দুর্বল হয়ে যেতে পারে, উপগ্রহের যোগাযোগে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে এবং কিছু ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থাও ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। ইতিমধ্যে নানা দেশে এই ধরনের ব্যাঘাত নথিভুক্ত হয়েছে। যদিও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি নিশ্চিত করেছে যে, এমন সৌরঝড় মানুষের শারীরিক স্বাস্থ্যে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না।

আরও কত বার দেখা মিলবে?
যখনই সূর্যের পৃষ্ঠে বড়সড় বিস্ফোরণ বা করোনাল মাস ইজেকশন ঘটে, সেই কণার স্রোত পৃথিবীর দিকে এলে এই দৃশ্য দেখা যায়। বর্তমানে সূর্য তার ১১ বছরের চক্রের সক্রিয়তম পর্যায়ে থাকায় আগামী কয়েক মাস এমন দৃশ্য আরও বারবার দেখা যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন মহাকাশ আবহাওয়াবিদরা।


