Last Updated on [modified_date_only] by Aditi Singha
কে টিভি বাংলা ডিজিটাল: হাওড়া থেকে শেওড়াফুলি, রিষড়া থেকে আসানসোল পুরো রেললাইনজুড়ে এখন ছট উৎসবের আবহ (Indian Railways)। কিন্তু উৎসবের আনন্দে শামিল হওয়ার বদলে যাত্রীদের ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। অভিযোগ, স্টেশনে স্টেশনে সারাদিন ধরে বাজছে ভোজপুরি গান, এমনকি বড় স্টেশনের টিভি স্ক্রিনেও চলছে নাচ-গান। ফলে রেলের ঘোষণা শোনা যাচ্ছে না। যাত্রীদের প্রশ্ন, “কেন বাংলার মাটিতে বাংলার উৎসবে ভোজপুরি গান?”

বাঙালি সংস্কৃতি হারাচ্ছে কি? (Indian Railways)
রেলের একাংশের মতে, এ ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই রেলে বাঙালি আধিকারিকদের সংখ্যা কমছে, বাড়ছে অবাঙালি আধিকারিকদের দাপট। বাংলা পক্ষের সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ছট উপলক্ষে স্টেশনে ভোজপুরি গান বাজানো মানে বাংলায় বিহারের সংস্কৃতির আমদানি। দুর্গাপুজো বা কালীপুজোয় তো কখনও শ্যামাসঙ্গীত বা মহিষাসুরমর্দিনী বাজানো হয় না!” জাতীয় বাংলা পরিষদের সভাপতি ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস আরও কঠোর ভাষায় বলেন, “এটা বাংলার সংস্কৃতির অপমান। আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
রেলের পাল্টা সাফাই (Indian Railways)
বিতর্ক চরমে উঠতেই পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত জানান, “উৎসবের মরসুমে বহু যাত্রী সারারাত স্টেশনে থাকেন। ক্লান্তি কাটাতে গান বাজানো হয়। এটাই উৎসবের অংশ।” তবে সামাজিক মাধ্যমে রেলের সমালোচনার ঝড় উঠেছে। নেটিজেনদের দাবি “বাংলায় বাংলা সংস্কৃতিই থাকুক, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন নয়!”
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বাজছে ডিজে বক্স (Indian Railways)
এদিকে কলকাতা ও শহরতলির রাস্তায় চলছে অন্য এক সমস্যা। প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডেসিবেল সীমা লঙ্ঘন করে তারস্বরে বাজছে ডিজে বক্স, ঢোল ও লাউডস্পিকার। আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ ও পুলিশের নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও শব্দসীমা উপেক্ষিত। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, “শব্দবিধি মানা হচ্ছে না, রাত ১২টার পরও বাজছে ডিজে বক্স। প্রতিবাদ করলেই জোটে হুমকি।”
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন (Indian Railways)
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা স্বীকার করেছেন, “শব্দবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েকটি ক্লাবের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।” কিন্তু পরিবেশকর্মী নব দত্ত বলেন, “বাস্তবে পুলিশ কঠোর না হলে, ডিজে বক্স বাজানো বন্ধ হবে না। এই অবস্থা আমাদের লজ্জার।”
আরও পড়ুন: Murshidabad Cyber Crime: ভুয়ো ভিডিও-ছবিতে বিতর্ক, হাজারো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে তালা!
নিঃশব্দে হারাচ্ছে শান্ত কলকাতা
দীপাবলি ও বিসর্জনের রাতেই শহরের শব্দমাত্রা বহু এলাকায় ৯০–১২০ ডেসিবেল ছাড়িয়েছে। বারাসত, সোদপুর, সোনারপুর, মহেশতলা সব জায়গায় একই ছবি। স্থানীয় থানায় বহু অভিযোগ জমা পড়লেও ব্যবস্থা কার্যত নেই। বাংলার একদিকে রেলে ভোজপুরি গানের আগ্রাসন, অন্যদিকে শহরে শব্দ–তাণ্ডব। প্রশ্ন উঠছে সংস্কৃতি ও পরিবেশ, দু’দিক থেকেই কি বাংলা হারাচ্ছে তার নিজস্ব সুর?



